নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির গুজবে চারদিকে হৈই চৈ পড়েছে। আগে থেকেই কম মূল্যে পেঁয়াজ সংগ্রহের তাগিদে ক্রেতারা বড় বড় বাজারগুলোতে ভিড় জমিয়েছে। মঙ্গলবার সকালের পর পরিস্থিতি এতটাই বেশামাল হয়ে উঠেছে যে বিশেষ করে বাজার রোডের দোকানগুলোতে পেঁয়াজ কিনতে শত শত মানুষ ভিড় জমায়। এসময় ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ মূল্যে পেঁয়াজ সরবরাহ করতে থাকে এবং মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে এই অজুহাতে। বন্ধুরাষ্ট্র ভারত সোমবার থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং সমূহ মূল্যবৃদ্ধির খবর শহরের ছড়িয়ে পড়লে এক ধরনের হাহাকার পড়ে যায়। এই উদ্ভুত পরিস্থিতি মানুষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে বরিশাল জেলা প্রশাসন।
ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির খবর সোমবার রাতে টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রচার হলে মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে এধরনের আলোচনায় শোনা যায়। পূর্বে প্রতিকেজি পেঁয়াজ যেখানে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল আকস্মিক মঙ্গলবার সকালে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা বিক্রি শুরু করে। ক্রেতারা আগেভাগেই পেঁয়াজ সংগ্রহ করে রাখতে বাজারমুখী দৌড়ঝাঁপ শুরু করে।
সূত্র জানায়- গত সোমবার রাত থেকেই ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুত করে ফেলে। ভারতীয় পেঁয়াজ গুদামে রেখে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজ অতিরিক্ত দামে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করে। মঙ্গলবারের পরে পেঁয়াজ আর পাওয়া নাও যেতে পারে এবং থাকলে তার মূল্য ১৫০-২০০ টাকার বেশি হতে পারে এমন পিনিক সৃষ্টি করা হয়। ফলে বিভিন্ন এলাকার ক্ষুদ্র দোকানি থেকে ক্রেতারা বাজার রোডের বড় বড় আড়তের মুখে ভিড় জমায়। বেলা ১২টার পরে পরিবেশ পরিস্থিতি বেশামাল হয়ে ওঠে। হাজার হাজার ক্রেতাদের পেঁয়াজ সংগ্রহের জন্য জড়ো হতে দেখা যায়।
ব্যবসায়িক সূত্র জানায়- গুজব ছড়িয়ে গত এক সকালেই বিশেষ ব্যবসায়ী মহল দ্বিগুণ মনুফা লুফে নিয়েছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ীর গুদামে টনকে টনকে পেঁয়াজ মজুত করে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে- ২/১ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের মূল্য পড়ে যেতে পারে এই কারণে কিছু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কৃতিম সংকট সৃষ্টিতে সুযোগ নিচ্ছে। আরও কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে- বরিশালের নামকরা কয়েকজন ব্যবসায়ী গত সোমবার রাত থেকেই পেঁয়াজ গুদামজাত করতে শুরু করে। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন- ভারত থেকে পেঁয়াজ আপাতত রপ্তানি বন্ধ থাকলেও মূল্যবৃদ্ধির কোন সম্ভবনা নেই। কারণ এখনও পেঁয়াজ প্রতিটি আড়তে পর্যাপ্ত মজুত আছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় পেঁয়াজ মজুত করে পিনিক ছড়াচ্ছে। এই ব্যাপারে তারা সতর্ক রয়েছে এবং মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে তাদের একাধিক টিম মাঠে নামানোর প্রস্তুতি চলছে।’
Leave a Reply